নিজস্ব প্রতিবেদক :
নতুন করে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকার রক্ষা বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার অংশ নদীতে ধসে পড়েছে। ভাঙ্গনের মুখে ১৩টি বসতঘর ও দুটি দোকান অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে স্থানীয়রা।
আজ বুধবার (১১ জুন) দুপুরে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শনে আসেন সরকারের অর্থ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
ভাঙন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
উপদেষ্টা সালেউদ্দিন আহমেদ বলেন, মানুষের বসতবাড়ি নদীতে চলে যাওয়া দুঃখজনক। আমরা চাই এখানে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ হোক। সেই লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দ্রুত হাইড্রোলজিক্যাল স্টাডি ও ওয়াটার মডেলিং করে পরিকল্পনা নেওয়া হবে।’
উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, দুটি কারণে নদী ভাঙ্গে। একটি কারণ হচ্ছে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় আর দ্বিতীয় কারন হচ্ছে নদী থেকে অবৈধভাবে খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, শুধু শ্রমিক নয়, মূল ড্রেজারগুলো আটকাতে হবে এবং বালুখেকোদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘নদীশাসন অত্যন্ত জটিল কাজ। শুধু বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না। গত ১০ বছরে পদ্মার পানি ও স্রোতের গতি-প্রবাহ বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে ১১০ কোটি টাকা ব্যায়ে জাজিরার পদ্মা সেতু ল্যান্ডিং পয়েন্ট থেকে মাঝিরঘাট জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ২ কিলোমিটার ভাটিতে বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের ৩ নভেম্বরে মাঝিরঘাট জিরো পয়েন্ট এলাকায় বাঁধটির প্রায় ১০০ মিটার ধসে পড়ে। এবছর বাঁধটির সংস্কারে দায়িত্ব দেওয়া হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। দুই কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই স্থানে বালু ভর্তি জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলার কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এরই মধ্যে গত শনিবার (ঈদের দিন) ভোররাতে সংস্কার করা বাঁধের ১০০ মিটার অংশসহ পাশের আরও একটি স্থানে ভাঙন শুরু হয়। একদিনের মধ্যে বাঁধের ২০০ মিটার অংশ নদীতে তলিয়ে যায়। বাঁধ ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়েছে জাজিরা উপজেলার আলম খার কান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সি কান্দি এবং ওছিম উদ্দিন মুন্সি কান্দি গ্রাম। ইতোমধ্যে আলম খার কান্দি গ্রামের অন্তত ১০টি বসতবাড়ি ও দুটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), শরীয়তপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান বলেন, গত বছর বাঁধের যে অংশে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে সেখানে সংস্কার চলছিল। নদীতে পানি ও স্রোতের গতি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।
Leave a Reply