নিজস্ব প্রতিবেদক :
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থানা পুলিশ ও স্থানীয় বিএনপি নেতা শাখাওয়াত হোসেন সুজন হাওলাদারের বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীর ক্রয়কৃত জমিতে কাজ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গোসাইরহাট বাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আক্তার হোসাইন কাজী। তিনি ইউনাইটেড গোসাইরহাট লিমিটেড নামে একটি রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান।
সংবাদ সম্মেলনে আক্তার হোসাইন কাজী জানান, দাসের জঙ্গল মৌজার আরএস ১০০ নং খতিয়ানের ৩০১, ৩০২ ও ৩০৩ নং দাগে বৈধভাবে ৫৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। সেখানে তিনি প্লট তৈরি, মাটি ভরাট ও টিনশেড ঘর নির্মাণ করেন। তবে রাস্তার পাশে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণের সময় গোসাইরহাট পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য শাখাওয়াত হোসেন সুজন হাওলাদার পুলিশ ও লোকজন নিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন।
তিনি জমির দীর্ঘ আইনি ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, প্রায় সাত দশক ধরে এ জমি বনবিহারী কুন্ডু গংদের দখলে ছিল। পরবর্তীতে একাধিকবার জমি বিক্রি হলেও দিপু রায় চৌধুরী নামে একজন ওয়ারিশ দাবিদার হয়ে ২০০৫ সাল থেকে একের পর এক মামলা দায়ের করেন। এসব মামলার মধ্যে ১৫টিতেই তিনি পরাজিত হন। বর্তমানে চলমান দেওয়ানী ১৩/২০২০ মামলায় দিপু রায় চৌধুরী বিএনপি নেতা সুজন হাওলাদারকে আমমোক্তার নিয়োগ দিয়েছেন।
আক্তার হোসাইন কাজীর অভিযোগ, আদালত থেকে নিষেধাজ্ঞা খারিজ হওয়ার পরও সুজন হাওলাদার পুলিশ দিয়ে তাদের বৈধ জমির কাজে বাধা দেন। তিনি বলেন, “মাননীয় আদালতের কোনো কার্যকর আদেশ না থাকা সত্ত্বেও পুলিশ আমাদের বৈধ কাজে বেআইনিভাবে বাধা প্রদান করেছে। এতে আমরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।”
তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে জমিতে কাজ করার সুযোগ চান।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা শাখাওয়াত হোসেন সুজন হাওলাদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দিপু রায় চৌধুরীর বাপ-দাদারা ছিলেন ইদিলপুর পরগনার জমিদার। বনবিহারী কুন্ডু গংরা ছিলেন তাদের বাড়ির কর্মচারী। জমিদার পরিবার ভারতে চলে গেলে তারা অবৈধভাবে জমি ভোগদখল করে এবং ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে বিক্রির চেষ্টা করে আসছে। মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও ওই জমিতে স্থাপনা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাকসুদ আলম বলেন, জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। একপক্ষ স্থাপনা নির্মাণ করতে চাইলে অপর পক্ষ বাধা দিচ্ছে। সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ কাজ বন্ধ রাখতে বলেছে। তবে দুই পক্ষের মধ্যে আপস-মীমাংসা হলে জমিতে কাজ করার ক্ষেত্রে পুলিশের কোনো বাধা থাকবে না।
Leave a Reply